ছয় বছরের ব্যবধানে ২০২০-২১ অর্থবছরে সুদের হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারের বিদেশি ঋণের সুদের হার ছিল ০.৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। একই অর্থবছরে সরকার বিদেশ থেকে ঋণ নেবে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। এই ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদহার ছিল ০.৭ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ০.৮ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং সবশেষ ২০১৯-২০ অর্থ বছরে হয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) সরকারকে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে। আগামী অর্থবছরেও এই হারে সুদ দিতে হবে। তবে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিদেশি ঋণের সুদ হবে ১.৫ শতাংশ। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের তুলনায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ হার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ১০ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ।
এদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদহার ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। সরকার বাজেটের ঘাটতি অর্থায়নের জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ঋণ নিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরসহ পরবর্তী তিন অর্থবছরে সরকার দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ ২ হাজার ২৫৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা পরিশোধ করবে।
এসব অর্থের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে পরিশোধ করবে ৬৩৮ বিলিয়ন টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৪৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিশোধ করতে হবে ৮৬৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থ বছরে (২০২০-২১) ৫৮২ দশমিক ৫ বিলিয়ন টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬৮০ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৭৮৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬৮ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮০ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা সুদ পরিশোধ করতে হবে।
সরকার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩০৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩৩১ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৫৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৯৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫৭৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা পরিশোধ করেছে।
এসব অর্থের মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ২৯৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন টাকা, বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ ১৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদে গেছে ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদে গেছে ৩৩৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদে গেছে ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে গেছে ৩৮১ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪৬০ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৫২৮ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা।